Tuesday, December 11, 2018

আপনার সন্তানের সুস্থ ও সাবলীল মানসিকতা কি ভাবে গড়বেন পর্ব ১| How to Make Strong Mental Health of Your Child | Insight Psycological Counseling Care Naihati |

আপনিই আপনার সন্তানের বিকাশে সব থেকে বড় বাধা।












আমাদের বাড়িতে  একটি ছোট সন্তান জন্মালে, বাবা মা পরিবারের সকলেরই আনন্দ হয় । তবে সেইটি যদি পুত্র সন্তান হয় তবে আনন্দ কয়েক গুণ বেড়ে যায় এখনও বেশির ভাগ পরিবারেই।

হাসপাতালে বিসিজি দেওয়ার পর বাড়িতে আসে মা ও শিশু।

নামকরনের পালা শেষ হয়।
একটু বড় ,যখন বয়স ৩ বছর হয় । 
তখন আমরা ভাবতে থাকি আমার সন্তান বড় হয়ে কি হবে?

কি নিয়ে পড়বে?
কোন খেলা খেলতে দিলে তার ভাল ভবিষ্যত হবে, 
কি করলে ভবিষ্যতে উন্নতি হবে, 
 নাচ-গান কম্পিউটার ইত্যাদি ইত্যাদি।

আশেপাশে কোন ভালো মাস্টারমশাই আছেন, যার কাছে খুব ভালোভাবে লেখাপড়া শিখবে।

আমার সন্তানটিকে একটু ভালো স্কুল অর্থাৎ নামী কোন ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে দেওয়া খুব জরুরী। 
সে কখন পড়তে বসবে, 

কখন খাবার খাবে, 
কখন  সাঁতারে যাবে, 
কখন আঁকতে যাবে, 
কখন সে টিউশন পড়বে, 
কখন সে টিভি দেখবে, আরও অজস্র নিয়ম, অজস্র দায়িত্ব আমাদের মাথায় ঘুরপাক করতে থাকে।



মূল পর্বের কথাগুলো বলার আগে একটা ছোট্ট গল্প বলি।











গল্প ১- স্কুলেতে মাস্টারমশাই পড়াতে পড়াতে হঠাৎ করে দেখলেন জানলার পাশে খোলস ছেড়ে একটি গাছ থেকে একটি প্রজাপতি বেরচ্ছে, 

মাস্টারমশায়ের মনে হল এ দৃশ্য ছাত্রদের দেখানো উচিত, তাহলে পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে তারা পাবে বাস্তব অভিজ্ঞতা, তারও অনেক কিছু শিখতে পারবে এবং যে পড়াটা আমি পড়াচ্ছি আরো ভালোভাবে বুঝতে পারবে, বিষয়টা ঘটছিল ঠিক জানালার একদম পাশেই একটি গাছের ডালে যেখানে হাত দেওয়াটা সকলের পক্ষে সম্ভব। সকল ছাত্র কে ডেকে তিনি এ দৃশ্য দেখতে বললেন, খুব ধীরে ধীরে প্রজাপতিটি খোলস ছেড়ে বেরচ্ছিল। 

মাস্টারমশাই বললেন তোমরা দেখো আমি একটু আসছি। সকল ছাত্রই বেশ আগ্রহের সাথে ব্যাপারটা বোঝার চেষ্টা করছিল আর দেখছিল।
প্রজাপ্রতিটি যখন খোলস ছেড়ে বের হচ্ছিল তার খুব কষ্ট হচ্ছিল,পাখনার দ্বারা সে খোলসটাকে কোনভাবেই ভাঙতে পারছিল না । সে মাঝে মাঝে চেষ্টা করতে করতে চেষ্টা ছেড়ে দিচ্ছিল,
 আবার খানিকক্ষণ চুপ করে বসার পরে আবার চেষ্টা করছিল। এই দৃশ্য দেখার পর ছাত্ররা বলে উঠলো প্রজাপতিটি মনে হয় খোলস ছেড়ে আর বেরতে পারবে না , মারা যাবে।
তাই তারা সবাই মিলে ঠিক করল খোলসটি  ভেঙে দেবে যাতে প্রজাপতিটি সহজেই বেরতে পারে, তারপর তারা তাই করল। 

মাস্টার মশাই ঘরে এসে দেখলেন বেঞ্চের উপরে খোলস থেকে প্রজাপতিটি বেরিয়ে পড়ে আছে। সকল ছাত্র মিলে প্রজাপতিটিকে ঘিরে অপেক্ষা করছে কখন সে উড়বে। কিন্তু সে উড়ছে না , এবং খুব ধীরে ধীরে মাঝে মাঝে ডানা নাড়ানোর চেষ্টা করছে।

মাস্টারমশায় বললেন একি করেছ তোমরা তো প্রজাপতিটির ওড়ার ক্ষমতাই নষ্ট করে দিয়েছ। 
প্রজাপতি যখন খোলস থেকে বের হয় তখন তার ডানা দিয়ে খোলসটি কে ভাঙ্গার চেষ্টা করে , তার ফলে তার 
ডানাতে ওড়ার ক্ষমতা তৈরি হয়,
 কিন্তু এখানে ছাত্ররা কি করেছিল, প্রজাপতিটির খোলসটিকেই ভেঙে দিয়েছিল, তারা ভেবেছিল খোলস ভেঙে দিলে সহজেই খোলস থেকে বেরিয়ে প্রজাপতিটি উড়তে পারবে, কিন্তু সেই প্রজাপতির ডানার ওড়ার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল অর্থাৎ সে আর কোনদিনই উড়তে পারবে না।

আমরা একটি শিশুর নিয়ম-শৃঙ্খলা  যেমন --কখন সে কি করবে ,
কখন সে কি করবে না ,

এছাড়া সমস্ত বাধাকে সমাধান করে দেওয়ার চেষ্টা করি। সকল বাধা যদি আমরাই সমাধান করে দিই তাহলে একটি শিশু বাধা কি সেই বিষয়ে বুঝবে কি করে? 
সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তার জন্মায় না, কনফিউশন জন্মায়।

খুব ভালো স্কুল, সবথেকে বেস্ট সুযোগ-সুবিধাগুলো দিলেই কি আপনার সন্তান সবথেকে যোগ্য হয়ে উঠবে ?

আমি কিন্তু ভালো স্কুল অথবা খুব ভালো সুযোগ সুবিধার বিরুদ্ধে বলছি না । "আমি বলতে চাইছি তাকে সমস্যা সমাধান করার মত শক্তিটা দিন। " এই পৃথিবীতে প্রত্যেকটা জিনিস কে বুঝতে হবে, প্রত্যেকটা জিনিসের সঙ্গে তার লড়াই করার মত ক্ষমতা থাকতে হবে।

একটা শিশুর জন্য মানসিক বিকাশ সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ । 

আপনি কি কখনো সেই বিষয়ে ভেবেছেন?
 ভালো স্কুল ভালো সুযোগ-সুবিধা ভালো পড়াশোনা সমস্ত ভালো ভালো ভাবতে ভাবতে নিজের প্রতি জোরটা হারিয়ে ফেলবে।

একজন মানুষের Coping Capacity উপর তার লড়াই করার ক্ষমতা অনেকটা নির্ভর করে।



@আপনি কি কখন ভেবে দেখেছেন আপনার শিশু যাতে মোবাইল ব্যবহার না করে তার জন্য আপনার মোবাইল ব্যবহার করাটা কমাতে হবে ।


@আপনি কখনও কি ভেবে দেখেছেন যে ,কোন একটা বই আপনি যদি খানিকক্ষণ ধরে পড়েন, তাহলে আপনার শিশুও দেখবে যে  আমার বাবা এবং মা বই পড়ছে ।
@আপনি কি ভেবেছেন কখন তার সামনে  চিৎকার করে ঝগড়া করবেন না।
@সে যখন পারে না তাকে নিয়ে পরিহাস করেছেন কিন্তু তার মানসিক অবস্থার বিকাশের জন্য , তার মানসিক বল বৃদ্ধির জন্য কোন ব্যবস্থা নিয়েছেন কি?

শারীরিক বল যেমন গুরুত্বপূর্ণ তার থেকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ মানসিক বল।

যত বড় বড় বৈজ্ঞানিক আপনারা দেখেছেন প্রত্যেকে বারবার বিফল হয়েছে কিন্তু তাদের সফলতার পেছনে একটাই কারণ ছিল , সেটা হচ্ছে তাদের মানসিক ক্ষমতা, তাদের ক্ষমতার প্রধান জায়গা ছিল তারা হার মানবে না।
এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্য এই মানসিকতা প্রত্যেকের প্রয়োজন কারন আপনি যে দিনকে হেরে যাবেন, আপনার সেদিনকে লড়াই করার ক্ষমতা আপনার মন থেকে চলে যাবে সেদিনই আপনি মৃত।

এটাই পৃথিবীর নিয়ম । জঙ্গল একটি বাঘ বয়স হয়ে গেলে মারা যায় না, জঙ্গল একটি বাঘের বয়স হয়ে গেলে অন্য বাঘরা তাকে মেরে ফেলে।
আমরাও কিন্তু ইট-কাঠ, পাথরের এই জঙ্গলে বসবাস করি।

পৃথিবীর যত বিখ্যাত মানুষ আছেন সকলকে যদি লক্ষ্য করেন কেউ কিন্তু বিখ্যাত Family থেকে জন্মগ্রহণ করে বিখ্যাত হয়নি। তারা কোন বিখ্যাত বিখ্যাত স্কুলে তেও পড়েনি। তাদের বাবা-মার হয়তো বিশেষ কোনো প্রতিভা ছিল না। এদের মধ্যে অনেকে আছে যাদের মানসিক সমস্যা , ও শারীরিক সমস্যায় জর্জরিত ছিল। 

শিশুকে শিক্ষা দিন, আপনার দীক্ষা দেবেন না।



যদি লেখাটি মনেহয় কিছু শেখার মতো তথ্য আছে, অথবা ভালো লেগে থাকে, তাহলে Share করুন, আমার লেখা পড়তে হলে Page er ওপরে  ডান দিকে Follow button এ ক্লিক করুন যাতে পরের পোস্ট টি আপনার কাছে নিজে থেকে পৌঁছে যেতে পারে।
পাশের ছবিটি দেখুন।

আগের লেখার লিংক



Click Hear 







আমি
পবন দাস
মনোবিদ
নৈহাটি
8902163630

short-motivational-story-writing-in-bengali-bangla
short-motivational-story-writing-in-bengali-bangla
short-motivational-story-writing-in-bengali-bangla
short-motivational-story-writing-in-bengali-bangla
short-motivational-story-writing-in-bengali-bangla

No comments:

Post a Comment